Educational Technology

সাবজেক্ট রিভিউ এন্ড ক্যারিয়ার প্যাথওয়েস: বি.এস.সি. (অনার্স) ইন এডুকেশনাল টেকনোলজি





চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত এবং বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ। সরকারের রূপকল্প 2021 এবং 2041 এর ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বে রূপান্তরের লক্ষ্যে অনলাইন শিক্ষার নতুন দিক উন্মোচন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় ডিজিটাল জ্ঞানের উন্নতি সাধন এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা, যা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষত বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সাথে সংগতি রক্ষা করবে।
বিডিইউ-তে এডুকেশনাল টেকনোলজি (Educational Technology) বিভাগটি “ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অনুষদের (Faculty of Digital Transformation)” অধীনে চালু রয়েছে। অনুষদটির সাথে সম্পৃক্তভাবে “ইনস্টিটিউট ফর অনলাইন এন্ড ডিস্টেন্স লার্নিং (Institute for Online and Distance Learning)” এর অধীনে ডিজিটাল লার্নিং ডিজাইন সার্টিফিকেট কোর্স চালু করেছে, যা বিডিইউ মুক (BDU MOOC) দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রথমেই আসি Educational Technology (EdTech) বিষয়টি আসলে কি? আমরা হয়ত অনেকেই EdTech নামটির সাথে পরিচিত। এডুকেশনাল টেকনোলজি যা EdTech নামে পরিচিত, মূলত প্রযুক্তি (Technology) ও শিক্ষা (Education) এর সমন্বয়। সহজভাবে বললে, শিক্ষায় প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে গতানুগতিক শিক্ষার ধারাকে পরিবর্তন করা। এটি এমন একটি বিষয় যেখানে টেকনোলজি এবং এডুকেশন এই দুটি স্ট্রিম পরিপূরকভাবে কাজ করে শিক্ষাক্ষেত্রে ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির একটি ডায়নামিক সংমিশ্রণ (Dynamic Blend) তৈরি করেছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে Education 4.0 (EDU 4.0) অর্জন ও দক্ষ মানবশক্তি গঠনই এই সাব্জেক্টের মূল লক্ষ্য। EDU 4.0 অর্জন না করা পর্যন্ত 4th Industrial Revolution (4IR) মূল্যহীন, কারণ সেটি গ্রহণ করার জন্য থাকবে না পর্যাপ্ত দক্ষ এবং আগ্রহী জনবল। নেক্সট জেন সাব্জেক্ট হিসাবে একজন EdTech শিক্ষার্থীকে অব্যশই একুশ শতকের শিক্ষার তিনটি মূল নীতিকে ধারন করতে হবেঃ Learn, Unlearn এবং Relearn.
.

"Educational Technology" Course Structure in BDU

এখন আসা যাক, আমরা এডুকেশনাল টেকনোলজির চার বছরের আন্ডারগ্রাজুয়েট ডিগ্রিতে কি কি পড়বো। বিডিইউতে এডুকেশনাল টেকনোলজি বিভাগ থেকে প্রদানকৃত ডিগ্রিটি হল- “বি.এস.সি. (অনার্স) ইন এডুকেশনাল টেকনোলজি / B.Sc. (Honors) in Educational Technology”। মূলত, এই বিষয়টিতে যৌথভাবে তথ্য-প্রযুক্তি এবং শিক্ষা প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কোর্স করানো হবে। বিষয়টিতে চার বছরে যা শেখানো হবে, সেগুলোকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি-
  1. Information Technology / Software Courses
  2. EdTech Special Courses
  3. Other (Math, English, Business etc.) Courses
এডুকেশনাল টেকনোলজি বিষয়টিতে একজন শিক্ষার্থীকে চার বছরে সর্বমোট 140 ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে যার মধ্যে রয়েছে সর্বমোট 36 টি থিওরি কোর্স, 23 টি সেশনাল (ল্যাব) কোর্স, ক্যাপস্টোন প্রজেক্ট এবং থিসিস। থিওরি এবং সেশনাল (ল্যাব) কোর্সগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কোর্স এখানে দেওয়া হল:
  • Structured Programming Language; Object Oriented Programming Language
  • Data Structure and Algorithm; Discrete Mathematics and Graph Theory
  • Probability and Statistics; Engineering Mathematics; Advanced Mathematics
  • Operating System and Unix Programming
  • Database Management System; Android and Web Application Development
  • Industrial Revolutions and Emerging Technologies
  • Advanced Programming with Python and Scripting; Basic Principles of Cyber Security
  • Computer Networking; Cloud Computing
  • Data Science & Learning Analytics; Big Data Analytics in Education (Optional)
  • Artificial Intelligence in Education; Blockchain Technologies and Systems (Optional)
  • Software Engineering and Quality Assurance; Introduction to Internet of Things (Optional)
  • Introductory Education; Instructional Design, Methodologies and Technologies
  • Educational Psychology, Guidance and Counseling; Sociological and Philosophical Foundations of Education
  • Curriculum Design and Development; Theories, Models and Pedagogies in Education
  • Educational Measurement and Evaluation; STEAM Education Design and Development
  • Digital Content Design and Development; Multimedia, Animation and Data Visualization
  • Blended Education Design and Development; Educational Research and Data Analysis
  • Practicum: MicroTeaching and Simulation; Business Strategies and Entrepreneurship
  • Education Technology Policies, Practices and Ethics; Technical and Academic Writing
  • 3D Modelling and Simulation; Organization and e-Management of Educational Institutions (Optional)
EdTech সাব্জেক্টের কোর্স স্ট্রাকচার PDF কপি পোস্টের নিচে গুগল ড্রাইভ লিঙ্কে দেয়া হলো
.

Covid-19 Pandemic and Mass Awakening of "Educational Technology" in Worldwide

করোনার প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনের কারনে সারা বিশ্বের প্রায় 160 কোটি শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারেনি। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই ছিল সাড়ে তিন কোটি শিক্ষার্থী। কিন্তু এই সময়টায় থেমে থাকেনি শিক্ষাব্যবস্থা। উন্নত দেশগুলি তাৎক্ষণিকভাবে ভার্চুয়াল এবং অনলাইন শিক্ষাকে (Virtual & Online Learning) গ্রহন করে। এছাড়াও অনলাইনে থিওরি ক্লাশ ও অ্যাসেসমেন্ট এর পাশাপাশি প্রাক্টিক্যাল বিষয়গুলোও ভার্চুয়াল সিমুলেশনের মাধ্যমে ইন্টারঅ্যাকটিভভাবে সম্পন্ন করেছে- যার সমৃদ্ধকরন প্রকিয়া প্রতিনিয়তই চলমান। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ব্যাক্তিসাধারন সবাই একযোগে ডিজিটাল বা অনলাইন এডুকেশনের একটি ধরনা পেয়েছে বটে, কিন্তু সে শিক্ষায় রয়েছিল অনেক অবকাঠামোগত ব্যবধান।
"During the Pandemic, we mimicked just a fraction of technology-enabled teaching-learning."
করোনায় আমাদের অনলাইন শিখন ব্যাবস্থাটা ছিল হালবিহীন নৌকার মত। শিক্ষায় প্রযুক্তি একীভূত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় ঘাটতি রয়েছে, যা মহামারী দ্বারা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোভিড-19 পরবর্তী সময়ে ডিজিটাল শিক্ষা একটি বিকল্প নয় বরং একটি প্রয়োজনীয়তা হয়ে দাড়িয়েছে, যা EdTech গ্রাজুয়েটদের অপামার কর্মক্ষেত্র তৈরি করেছে।
.

Role of “Educational Technology” Graduates

একবিংশ শতাব্দী হল এমন এক সময় যেখানে, এডুকেশনাল টেকনোলজিস্ট-দের সুবাদে শিক্ষা আর শ্রেণীকক্ষের চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ থাকছে না৷ তারা হচ্ছেন ডিজিটাল শিক্ষার স্থপতি, যারা আজকের এবং ভবিষ্যতের শিক্ষার প্ল্যাটফর্মগুলি সংগঠন, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করবে। The Bureau of Labor Statistics (2020 সালের হিসাবে) অনুমান করেছে যে, কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি পেশাগুলিতে কর্মসংস্থান 2019 থেকে 2029 পর্যন্ত 11% বৃদ্ধি পাবে, যা সমস্ত পেশার গড় তুলনায় অনেক দ্রুত। এরই সাথে সম্পৃক্তভাবে শিক্ষাক্ষেত্রের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় পাল্লা দিয়ে বাড়বে এডুকেশনাল টেকনোলজিস্ট এর চাহিদা। একজন এডুকেশনাল টেকনোলজিস্ট এর কিছু ভূমিকা উল্লেখ করা যাকঃ
  • EdTech গ্রাজুয়েটরা শিক্ষামূলক সফ্টওয়্যার এবং প্ল্যাটফর্ম (Educational Software and Platform) তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা শিখন-শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করবে।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং মেশিন লার্নিং (ML) ব্যবহার করে পার্সোনালাইজড লার্নিং এক্সপেরিয়েন্স তৈরিতে সহায়তা করবে।
  • শিক্ষামূলক ছবি, ইলাস্ট্রেশন, পোস্টার, অডিও, ভিডিও, প্রজেন্টেশন, আনিমেশন, ব্লগ, উইকিস, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, ইন্টারাক্টিভ কন্টেন্ট, ইত্যাদি তৈরিতে পারদর্শী হবে।
  • LMS (Learning Management System), EMS (Exam Management System), EERP (Educational Enterprise Resource Planning), MOOC (Massive Open Online Course) প্রভৃতি তৈরি, ব্যাবহার, হালনাগাদ ও সংরক্ষণে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে।
  • অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR), ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (Database Administration), এডুকেশনাল ক্লাউড (Educational Cloud) গঠন, বিগ ডাটা (Big Data) নিয়ে গবেষণা করতে পারবে, যা শিক্ষাদান কৌশলগুলি উন্নত করতে এবং শিক্ষার্থীদের শেখার আচরণকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে।
  • সর্বোপরি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট (Content Management), সাইবার নিরাপত্তা (Cyber Security) প্রদান ও ডিজিটাল এডুকেশন (Digital Education) অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।
.

“Educational Technology” & Educational Institutions

ধরুন, এমন একটি শ্রেণীকক্ষ যেখানে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তক থেকে নয় বরং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সমুদ্রের পানির নিচে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শিখছে। এটিই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এডুকেশনাল টেকনোলজিস্টদের নিয়ে আসা পরিবর্তন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরো কি কি পরিবর্তন আসতে পারে তা দেখে নেয়া যাক:
  • AI Tutor এর সাহায্যে, একজন শিক্ষার্থী তার নিজস্ব ডিজিটাল টিউটরের অধিকারী হবে, যেটি পার্সোনালাইজড গাইডেন্স প্রদান করবে এবং সহজ ও বোধগম্যভাবে শিক্ষার্থীর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবে।
  • অ্যাডভান্সড অ্যালগরিদম ব্যবহারের মাধ্যমে Big Data Analytics শিক্ষার্থীর শিক্ষার প্যাটার্ন ও সক্ষমতাকে বুঝার চেষ্টা করবে, যা AI Tutor আরো নিখুঁত অধ্যয়ন পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করবে।
  • VR-Enabled Virtual Classroom এ প্রবেশ করে শিক্ষার্থী তার নিজ বাসা থেকে বের না হয়েই আকর্ষণীয় স্থানগুলিতে ভ্রমন করতে পারবে। প্রাচীন সভ্যতাগুলির অন্বেষণ, বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান, এমনকি মহাকাশে ভ্রমণ করা, সমস্ত অভিজ্ঞতাই সে 3D-Enabled ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে নিতে সক্ষম।
  • পাঠ্যপুস্তকগুলোর একঘেয়েমি ছবিগুলোকে জীবন্ত করে তুলবে Augmented Reality (AR)। বইয়ের যেকোনো পৃষ্ঠায় AR-enabled ডিভাইসটিকে নির্দেশ করলেই বিষয়বস্তুটিকে ইন্টারেক্টিভ 3D মডেল, অ্যানিমেশন এবং আকর্ষণীয় মাল্টিমিডিয়ায় রূপান্তরিত হয়ে যাবে।
  • শিক্ষায় Gamification বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি একটি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় পরিণত হবে! গেমে যেমন পয়েন্ট অর্জন করে নতুন মিশন আনলক করা যায়, তেমনি শিক্ষার্থীরা কুইজে পয়েন্ট অর্জনের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপে উন্নতী হবে।
  • Data Science & Machine Learning প্রযুক্তির সাহায্যে ক্রমাগত শিক্ষার্থীর শেখার ক্ষমতা বিশ্লেষণ করবে এবং তার চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে। শিক্ষার্থীর ধারনক্ষমতা অনুসারে তাকে ততটুকুই পাঠ অনুশীলন দেয়া হবে।
  • Blockchain Technology এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর একাডেমিক রেকর্ড এবং অর্জনগুলি সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব। এতে শিক্ষার্থী তার যাচাইকৃত অর্জনগুলিকে নিশ্চিতভাবে শেয়ার করতে পারবে।
  • এছাড়াও Educational Cloud একটি সুবিশাল ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মত কাজ করবে যেটি পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যেকোন সময়ে অনুমোদিত ব্যক্তি অ্যাক্সেস করতে পারবে।
Tyton Partners এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 2020 সালে ইতিমধ্যে 73% শিক্ষক ডিজিটাল শিক্ষামূলক উপকরণ ব্যবহার করছিলেন, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এডুকেশনাল টেকনোলজিস্টদের দ্রুত আবির্ভাবকে নিশ্চিত করে। McKinsey & Company এর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ই-লার্নিং শিক্ষার্থীদের ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শেখার সময় কমায়, যা শিক্ষাগত কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়।
.

“Educational Technology” & Tech Giants

বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আর এই তথ্য প্রযুক্তি নিয়েই কাজ করে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলো। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো তারা শুধুমাত্র প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষাক্ষেত্রেও যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। অধিকাংশ টেক জায়ান্ট কোম্পানিরই আলাদা এডুকেশন উইং আছে। যেমনঃ
  • অ্যাপল (Apple - https://www.apple.com/education/)
  • গুগল (Google - https://edu.google.com/https://learning.google/)
  • মেটা (Meta- https://www.facebook.com/MetaforEducation/ )
  • মাইক্রোসফট (Microsoft - https://www.microsoft.com/en-us/educationhttps://learn.microsoft.com/en-us/training/educator-center/)
  • ইনটেল(Intel-https://www.intel.com/content/www/us/en/education/intel-education.html)
  • আইবিএম (IBM - https://www.ibm.com/training/)
.

Blended Education in Bangladesh

এই অংশটা বুজার আগে এটা বুজতে হবে যে, ব্লেন্ডেড এডুকেশন আসলে কি? সহজভাবে বললে ব্লেন্ডেড এডুকেশন হলো প্রথাগত ক্লাশরুম শিক্ষার সাথে অনলাইন শিক্ষার এক মিশ্রন। মিশ্রন প্রক্রিয়াটি 'হ-য-ব-র-ল' নয় বরং এতে রয়েছে অনেক ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইনার, ব্লেন্ডেড এডুকেশন এক্সপার্ট, ইউ-আই ইউ-এক্স (UI-UX) ডিজাইনার, সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট, কারিকুলাম এক্সপার্ট, লেসন প্ল্যানার এবং এডুকেশনাল টেকনোলজিস্ট এর অবদান। অনেকটা ফিজিটাল (ফিজিক্যাল + ডিজিটাল) এডুকেশন। উন্নত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যেই ব্লেন্ডেড এডুকেশনকে ধারন করে তারা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিছু ব্লেন্ডড এডুকেশন পোর্টালঃ Harvardx, Harvard Extension School, edX, MITx, MIT Online, UMO Online.
এরই ধারাবাহিকতায় 2021 সালে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রি-স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত একটি ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য 10-11 টি মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ব্লেন্ডেড শিক্ষা টাস্কফোর্স গঠন করে। এই টাস্কফোর্স "সবার জন্য ব্লেন্ডেড শিক্ষা" নামে একটি কৌশল গ্রহন করেছে যেখানে রয়েছে তাৎক্ষনিক (2023 সালের মধ্যে), স্বল্পমেয়াদি (2025 সালের মধ্যে), মধ্যমেয়াদি (2031 সালের মধ্যে) এবং দীর্ঘমেয়াদী (2041 সালের মধ্যে) পরিকল্পনা। একবার চিন্তা করে দেখা যাক, যখন প্রি-স্কুল পর্যায় থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত ব্লেন্ডেড এডুকেশন বাস্তবায়ন করা শুরু হবে তখন ব্লেন্ডেড এডুকেশন এক্সপার্ট এর কতটুকু চাহিদা তৈরি হবে। ব্লেন্ডেড এডুকেশনের মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবকাঠামোর মধ্যে ছাত্রসংখ্যা 2-3 গুণ বাড়াতে সক্ষম।
সোর্সঃ https://bit.ly/3QFoi3b
.

EdTech Platform & Market size

এই অংশে ৪টি বড় এড-টেক প্লাটফর্ম নিয়ে কথা বলব শুধুমাত্র এতটুকু দেখাতে যে অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে তারা কি পরিমাণ রেভিনিউ উপার্জন করতে সক্ষম।
  • Udemy: বার্ষিক আয় $490 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোম্পানি ভ্যালুয়েশন $2.1 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা 6654।
  • Unacademy: বার্ষিক আয় $1758.2 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোম্পানি ভ্যালুয়েশন $3.4 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা 8782।
  • Coursera: বার্ষিক আয় $383.6 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোম্পানি ভ্যালুয়েশন $3.1 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা 3777।
  • edX: বার্ষিক আয় $113.4 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা 648।
সোর্সhttps://growjo.com/company/Udemy
এক্ষেত্রে বাংলাদেশেও অগ্রদূত হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে: শিক্ষক বাতায়ন, কিশোর বাতায়ন, A2I (অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন), 10 মিনিট স্কুল, অন্যরকম পাঠশালা, শিখো, বহুব্রীহি, মুক্তপাঠ, রেপ্টো, ই-শিক্ষণ, ব্রিটিশ কাউন্সিল ইত্যাদি। 10 মিনিট স্কুল শুধুমাত্র ২০২২ সালেই ৩.৭৬ মিলিয়ন ডলারের ফান্ড পেয়েছে Sequoia Capital এবং Surge এর পক্ষ থেকে। Reference: http://bit.ly/48IktRt
.

Career Pathways of “Educational Technology”

এডুকেশনাল টেকনোলজি বিষয়টির জন্য কর্মক্ষেত্র হিসেবে তথ্য প্রযুক্তি এবং শিক্ষা ক্ষেত্র উভয়কেই বিবেচনায় আনা সম্ভব। বাংলাদেশের কথা যদি চিন্তা করা যায় তবে কর্মক্ষেত্র বিবেচনায় এডুকেশনাল টেকনোলজি বিষয়টির চাহিদা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিষয়গুলোর তুলনায় এগিয়ে থাকবে। এখন দেখা যাক এডুকেশনাল টেকনোলজি বিষয়ের কোর্স স্ট্রাকচার এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে একজন EdTech গ্রাজুয়েটের সম্ভাব্য ক্যারিয়ার প্যাথ কী কী হতে পারে:
প্রযুক্তিক্ষেত্র - Technological Field
  • Professional Area 1: Software & App Developers
  • Professional Area 2: Data Analyst / Data Scientist
  • Professional Area 3: Web Developer / Database Administrator
  • Professional Area 4: ICT Devices & Networking Specialist
  • Professional Area 5: Cyber Security Specialist
  • Professional Area 6: UI/UX Designers
  • Professional Area 7: ICT Project Manager / Consultant
  • Professional Area 8: Entrepreneur (ICT or Relevant Field, E-Commerce)
শিক্ষাক্ষেত্র - Educational Field
  • Professional Area 1: Local and International NGO
  • Professional Area 2: ICT Teacher
  • Professional Area 3: ICT Trainer
  • Professional Area 4: Educational Researcher
  • Professional Area 5: Educational Consultant
  • Professional Area 5: Curriculum or Subject Matter Expert
শিক্ষা-প্রযুক্তিক্ষেত্র - EdTech Field
  • Professional Area 1: eLearning Expert
  • Professional Area 2: Learning Designer / Technologist
  • Professional Area 3: Online & Blended Education Expert
  • Professional Area 4: EdTech Specialist / Consultant
  • Professional Area 5: LMS, EMS, EERP Designer / Developer / Administrator
  • Professional Area 6: Digital Content Reviewers / Editors
.
এডুকেশনাল টেকনোলজি গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি এবং শিক্ষাক্ষত্রে কম্পিটিটর থাকলেও, শিক্ষা-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে (EdTech Field) প্রত্যক্ষভাবে তেমন কোন কম্পিটিটর নেই বললেই চলে। কেননা বাংলাদেশে একমাত্র বিডিইউ-ই এডুকেশনাল টেকনোলজি বিষয়ে চার বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রদান করে। কেবল 2020 সালেই, Glassdoor মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 40,000 এরও বেশি EdTech চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার পার্ক, আইটি ফার্মে প্রচুর দক্ষ জনবল দরকার যার আংশিক চাহিদা এডুকেশনাল টেকনোলজি গ্রাজুয়েটরা পূরণ করতে পারে। বর্তমান সরকারের আইসিটি ডিভিশন এর অধীনে প্রত্যেক জেলা এবং উপজেলাতে আইসিটি সেন্টার চালু হচ্ছে যার জনবল অভাব এই গ্রাজুয়েটরাই পূরণ করতে পারবে। উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার জন্য এই বিষয়টি কোন জুড়ি নেই। কেউ চাইলে একজন রিসার্চার হিসেবেও কাজ করতে পারে। এছাড়াও কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং এবং প্রবলেম সলভিংয়ে ভালো করে প্রোগ্রামার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যও রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে পৃথিবীর বড় বড় টেক-জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর থাকছে কাজের করার সুযোগ। সরকারী চাকরির কথা বললে নিজ যোগ্যতায় বিসিএস পরিক্ষায় থাকছে একজন জেনারেল ক্যাডার হিসাবে ঢুকার সুযোগ। আর আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা তো আছেই।
বর্তমানে পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অনলাইনে এডুকেশন সিস্টেম চালু হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইনার প্রয়োজন, যারা এডুকেশনাল কনটেন্ট ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর পাশাপাশি অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্ম পরিচালনা করবে এবং ফ্যাকাল্টি সাপোর্ট ও ট্রেনিংয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। দৃঢ় স্পৃহা থাকলে এডুকেশনাল পলিসি মেকার হিসাবেও কাজ করা সম্ভব। আর যারা এন্টারপ্রেনার হতে চায় তাদের জন্য রয়েছে অপার সম্ভাবনা।
পরিশেষে বলব, এডুকেশনাল টেকনোলজি সাবজেক্টে অধ্যায়নের জন্য যে দুটি জিনিস সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেগুলো হলো: ক্রিয়েটিভিটি এবং প্যাশন। মনে রাখতে হবে, এই বিষয়টি সচরাচর অন্যান্য সাবজেক্ট এর মত না। ধৈর্য এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা এই দুটো গুণ থাকলেই তোমাদেরকে স্বাগতম বিডিইউ এর ক্যাম্পাসে।

No comments

Powered by Blogger.
Youtube Channel Image
ABS EMON Subscribe To watch more video Tutorials
Subscribe